কোভিড ভ্যাকসিন নিলে নাকি মানুষ মারা যায়!!!
বর্তমানে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের মানুষদের ও কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।তবে এখন ও ভ্যাকসিনকে নিয়ে সাধারণ মানুষদের মনে বিভিন্ন ভয়-ভীতি কাজ করছে।এই ভ্যাকসিন নিলে নাকি মানুষ মারা যায়।
আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে যখন প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়া হয়,তখন একজন নার্স মারা যান ভ্যাকসিন নেওয়ার পরপরই।এ নিয়ে তখন ভারতে চলে বিভিন্ন আলোচনা -সমালোচনা।অনেকে তো ভয়ে ভ্যাকসিন নিতেই চাইলেন না।আসলে ঐ নার্সের মৃত্যুর কারণ ছিল হার্ট অ্যাটাক।কিন্তু অনেকে তা সঠিকভাবে না জেনেই ভুল সিধান্ত নেন।
এবার আসুন জেনে নেই ভ্যাকসিন কি?কিভাবে তৈরি করা হয়?এবং কোভিড ভ্যাকসিন কি সত্যিই মানুষের জন্য ক্ষতিকর নাকি উপকারি।
ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে অণুজীবের,বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস - এর সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায়কে "ভ্যাকসিনেশন" বলে।প্রক্রিয়াটি সাধারণভাবে "টিকা "দেওয়া নামে পরিচিত।নির্দিষ্ট রোগের ভ্যাকসিন নির্দিষ্ট জীবাণু থেকেই সংগ্রহ ও উৎপন্ন করা হলেও প্রক্রিয়াগত কারণে এ পদার্থ মানবদেহে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা রোগ সৃষ্টির পরিবর্তে দেহকে রোগমুক্ত রাখতে,রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপি দেওয়া হয়।তবে ভারতে করোনার কারণে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার হঠাৎ করে অনেক বেড়ে যাওয়ায় ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট ভ্যাকসিনের ডোজগুলো পাঠাতে পারেনি।তাছাড়া চীনের সিনোর্ফামের ২০ লাখ ডোজ টিকা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে মর্ডানার ২৫ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে এসেছে এবং খুব তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন দেশের মানুষদের দেওয়া হবে।
১০০% কোভিড ভ্যাকসিন কাজ না করলেও এটি মানবদেহে এন্টিবডি তৈরি করে যা আমাদেরকে করোনা ভাইরাসের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করবে।মডার্না,ফাইজার ও অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের শেষ পর্বে ৯০% কার্যকর বলে উঠে এসেছে।
ফাইজার ভ্যাকসিনে দুটি ডোজ দেওয়ার পর ৯৫% সুরক্ষা পাওয়া গেছে।মডার্না ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ৯৪.৫% কার্যকর বলে জানা গেছে।তবে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকরা জানিয়েছেন,তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষা এখনও চলছে।অক্সফোড ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে কার্যকারিতার হার ৬২%।প্রথম ডোজ প্রদানের ২২ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিনের সুরক্ষা পাওয়া যায় ৭০%।তিন মাস ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ নিলে এর কার্যকারিতা ৮০% বেড়ে যায়।
কোভিড ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়াল সম্পন্ন করে তবেই তা সাধারণ মানুষের দেহে প্রয়োগ করা হয়।তাই এতো দুঃচিন্তার কারণ নেই।এখন পযর্ন্ত জানা তথ্য অনুযায়ী,এ ভ্যাকসিন নেওয়া পর কারোরই মৃত্যু হয় নি বা মারাত্মক কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় নি।তবে ফাইজার ও অক্সফোর্ডের টিকাতে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে।যেমন-অক্সফোর্ডের টিকার সঙ্গে এখনও প্যারাসিটামল ও দেওয়া হচ্ছে।কারণ টিকা নেওয়ার পরে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার সমস্যা হচ্ছে ফলে টিকা গ্রহণকারীর জ্বর হচ্ছে।যে রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাদের চিকিৎসা করতে গিয়ে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো বোঝার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
মাস্ক পরিধান করা,স্বাস্থবিধি মেনে চলা,সামাজিক দূরত্ব বঝায় রাখা,সুষম খাদ্য গ্রহণ,দুঃচিন্তা মুক্ত থাকা,পরিমিত বিশ্রাম ও ব্যায়াম করা সহ করোনা ভাইরাস থেকে দীর্ঘস্থায়ী মুক্তি পেতে হলে ভ্যাকসিন নেওয়া খুবই জরুরি।ভ্যাকসিন মানব শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরী করে যা শরীরকে ভাইরাসের মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।যদি ও কোভিড ভ্যাকসিনের কার্যকাল কত দিনের জন্য এ নিয়ে সবার মনে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন আছে।তবু ও সুস্থ -স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নেই।তাই আমাদের উচিত ভ্যাকসিন গ্রহণে সচেতন হওয়া।
Thank you
ReplyDeleteWelcome
Delete