আজ প্রথমবার পালিত হচ্ছে "বিশ্ব পানিতে ডুবে ম‍ৃত‍্যু প্রতিরোধ দিবস "

 


পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ বিষয়ক ঐতিহাসিক এক রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করলো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ।রেজুলেশনটিতে পানিতে ডুবে মৃত্যু কে একটি "নীরব মহামারী"হিসেবে স্বীক‍ৃতি দেওয়া হয়েছে।জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এটিই এধরনের প্রথম রেজুলেশন।২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ নীরব এই বৈশ্বিক মহামারীর বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক প্ল‍্যাটফর্মে নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছিল।অবশেষে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর বাংলাদেশের প্রস্তাবে ২৫ শে জুলাই কে "বিশ্ব পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস" হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী,বিশ্বে প্রতিবছর  ২ লাখ ৩৫ হাজার জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়।বিশ্বজুড়ে ১ দশকে মারা যায় ২৫ লাখ জন মানুষ পানিতে ডুবে।এর মধ্যে বেশিরভাগ ৫ বছরের কম বয়সী শিশু।প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ১৮ হাজার জন মানুষ পানিতে ডুবে ম‍ৃত‍্যুবরণ করছে।

সারাবছর প্রায় প্রতিদিন টিভি বা খবরের কাগজ খুললেই দেখা যায় মানুষ পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে।এক্ষেএে শিশুদের সংখ্যাই বেশি।তবে বর্ষাকালে (জুন থেকে অক্টোবর )পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হয়।বাংলাদেশে কুড়িগ্রামে বেশি মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়।পানিতে ডুবে মৃতদের ৯১ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের কম।বাংলাদেশে প্রতিবছর ১০ হাজার জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে।



পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর মূল কারণ অসতর্কতা।শুধু গ্রামেই নয় শহরেও দেখা যায় পানিতে ডুবে শিশু মারা যায়।খুব অল্প পানিতে পড়েও শিশু মারা যেতে পারে,যেমন:-বালতি।পানিতে ডুবার ৭৯ শতাংশ ঘটনা ঘটে দিনের বেলায়।এ সময় শিশু পানির সংস্পর্শে বেশি যায়।শিশু মৃত্যু পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জানা যায়,দিনের প্রথম ভাগে অর্থাৎ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে শিশুর মৃত্যু হার ৪০%(৫৩৭ জন)।বেশিরভাগ
ক্ষেত্রে মা এই সময় কাজে ব‍্যস্ত থাকেন।ফলে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকে।

পূর্বে যৌথ পরিবারে শিশু বড় হতো,পরিবারের কয়েকজন সদস্য মিলে শিশুদের খেয়াল রাখত।কিন্তু বতর্মানে যৌথ পরিবারের সংখ্যা কমে যাওয়ায় শিশুরা অরক্ষিত অবস্থায় থাকছে এবং বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।পানিতে ডুবে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা বেশি মারা যাচ্ছে।এতে যেমন পরিবারটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাথে সাথে একটি মূল্যবান জীবন অকালে ঝরে যাচ্ছে।

যেভাবে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু হার কমানো যাবে :-

(১)৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের সর্বক্ষণ বড়দের তও্বাবধানে রাখতে হবে।তারা যাতে কোনো জলাশয়ের কাছে না যায়।

(২)পুকুর/ডোবা/জলাশয়ের চারপাশ বেড়া দিতে হবে।

(৩)যেসব শিশুর খিচুঁনি বা মৃগীরোগের লক্ষণ আছে তাদেরকে জলাশয়ের কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে।

(৪)৬ বছর থেকে ১০ বছরের মধ্যে শিশুদের অবশ্যই সাতাঁর শিখাতে হবে।




(৫)আমাদের দেশে যেসকল জায়গায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু হার বেশি সরকারি ভাবে সেসকল জায়গা গুলোতে Child Day Care Center (আচঁল) চালু করতে হবে।দিনের যে সময় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু হার বেশি সকাল ৮/৯ থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত এবং পরিবারে দেখাশোনার মানুষ না থাকলে শিশুদের সেখানে রাখলে শিশু মৃত্যু কমানো যাবে।



(৭)সবাইকে পানিতে ডুবা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হবে।দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে পানিতে ডুবা শিশুদের বাচাঁনো সম্ভব হবে এবং মৃত্যুর হার অনেকটাই কমানো যাবে।




(৮)CPR সম্পর্কে মানুষের ট্রেনিং দিতে হবে।এতে করে ৮০% মৃত্যু কমানো সম্ভব।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

সফেদা বা (Sapodilla)ফলের গুনাগুন।

গর্ভাবস্থায় যোগ ব‍্যায়াম(yoga) এর উপকারিতা।